অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছাত্রের সঙ্গে শিক্ষিকার দৈহিক সম্পর্ক
ছাত্র আর শিক্ষকের মধ্যে একটি পবিত্র সম্পর্ক থাকে। কিন্তু কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন, যারা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে অবাধ যৌনাচারে লিপ্ত হতেও দ্বিধা করেন না। এমনই এক শিক্ষিকা বৃটানি জামোরা। মাত্র ১৩ বছর বয়সী এক ছাত্রের সঙ্গে অবাধ যৌনতায় লিপ্ত হতেন তিনি। কখনো নিজের গাড়িতে, কখনো ক্লাসরুমে এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনার লাস ব্রিসাস একাডেমির শিক্ষিকা ২৮ বছর বয়সী জামোরা। সম্প্রতি তার এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিষয়টি ধরা পরার পর তিনি ওই ছাত্রের পিতার কাছে অনুনয় করেন তিনি যেন বিষয়টি পুলিশে না জানান। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি জামোরার। তাকে এ অপরাধে ২০ বছরের জেল দেয়া হয়েছে। আখ্যায়িত করা হয়েছে সারাজীবনের জন্য সেক্স অফেন্ডার বা যৌন নির্যাতনকারী হিসেবে। বৃটানি জামোরাকে আগামী ২০ বছর বা দুই দশক অ্যারিজোনা রাজ্যের পেরিভিলে জেলেই কাটাতে হবে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকার অনলাইন সংস্করণ।
এরই মধ্যে নতুন একটি রেকর্ডিং ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে শোনা যায় টেলিফোনে ওই বালকের পিতার সঙ্গে কথা বলছেন জামোরা। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় করতে শোনা যায়। এরপরেই ওই যুবতী শিক্ষিকা বালকটির পিতাকে অনুনয় করেন, তিনি যেন বিষয়টি পুলিশে না জানান। এতে জামোরাকে বলতে শোনা যায়, আমরা কি এ বিষয়ে আলোচনা করতে বসতে পারি? আদালতের বাইরে কি আমরা এটার নিস্পত্তি করতে পারি না? কিন্তু তার এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন ওই বালকের পিতা। তিনি বলেন, ঠিক আছে। আমি এই সুযোগটি আপনাকে দিতে পারি, তবে সেটা হলো অন্য বালক বা বালিকার জন্য। এরপর বৃটানি জামোরা ফোন দিয়ে দেন তার স্বামীর কাছে। এ সময় যৌন নির্যাতনের শিকার বালকটির পিতাকে বলতে শোনা যায়, আপনার স্ত্রী দানব হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতন চালান। তিনি আমার ছেলেকে মানসিকভাবে আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছেন। আপনি কি আন্দাজ করতে পারেন, মাত্র ১৩ বছর বয়সী একটি বালক কিভাবে তার শিক্ষিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে? আপনি কি এটা মানবেন? আর এখন আপনি আপনার স্ত্রীকে মাফ করে দেয়ার অনুরোধ করছেন আমার কাছে!
বৃটানি জামোরার বিরুদ্ধে তিন দফা অভিযোগ আনা হয়েছে। তা হলো একটি অপরিণত বালকের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন, একটি শিশুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন এবং প্রকাশ্যে যৌন আচরণ। তার বিরুদ্ধে যে শাস্তি ঘোষণা করা হয়েছে তাতে ভাল আচরণ দেখালেও তিনি মুক্তি পাবেন না। এর অর্থ হলো, জামোরাকে অবশ্যই শাস্তির পুরো মেয়াদ জেলেই কাটাতে হবে। তখন তার বয়স হয়ে যাবে ৪৮ বা ৪৯ বছর। এরপরও জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তাকে যৌন অপরাধী হিসেবে নিবন্ধিত করা হবে।
বৃটানি জামোরার এই কাহিনী ধরা পড়ে ওই ছাত্রটির অদ্ভুত আচরণে। আকস্মিক তার পিতামাতা তার মধ্যে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। এ জন্য তারা মোবাইল ফোনে নজরদারিকারী একটি অ্যাপ ইন্সটল করেন। ছাত্রটির মোবাইল ফোনে সন্দেহজনক অথবা আপত্তিকর কোনো ম্যাসেজ যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই অ্যাপটি তার পিতামাতাকে এলার্ট পাঠায়। তারা ছেলের মোবাইল থেকে আপত্তিকর টেক্সট ম্যাসেজের এলার্ট পাওয়া শুরু করেন। এরপর নিজেদের ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এতে সে স্বীকার করে। বলে, শিক্ষিকা বৃটানি জামোরার সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক রয়েছে। এ খবর শুনে ভেঙে পড়েন তার পিতামাতা।
বৃটানি জামোরার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন তা ওই ছাত্রের পিতা বা মাতা। তবে তার মা আইনজীবীর মাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছেন আদালতে। তাতে তিনি বলেছেন, বৃটানি জামোরা আমাদের আস্থার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। একজন ভিক্টিমকে চিরদিনের মতো তার স্বভাবকে পাল্টে দিয়েছেন। আমার সন্তান নিরপরাধ ছিল। তার সেই নিষ্পাপবোধকে চুরি করেছেন জামোরা। আমার ছেলে ও পরিবারের প্রতি যা করেছেন তার জন্য আমি জামোরাকে ঘৃণা করি।