কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার
এখন থেকে সরাসরি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার শাসিত অঞ্চল হলো জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখ। ভারতের প্রদেশটির আর বিশেষ মর্যাদা রইল না। মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তে রীতিমত অসন্তুষ্ট প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তান।
পাকিস্তান জানিয়েছে, ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের (আইওকে) বিষয়ে ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের নেওয়া অবৈধ পদক্ষেপগুলোর বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নেবে।
এদিকে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি এবং ওমর আব্দুল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়াও কাশ্মীর পিপলস কনফারেন্সের দুই নেতা সাজ্জাদ লোন এবং ইমরান আনসারিকেও বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সোমবার (৫ আগস্ট) তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। গত রবিবার মধ্যরাত থেকে গৃহবন্দি ছিলেন তারা।
শ্রীনগরের বাড়ি থেকে মেহবুবাকে সরিয়ে নিকটবর্তী সরকারি গেস্ট হাউসে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারি সিদ্ধান্তকে আদালতে চ্যালেঞ্জ জানাবেন বলে এদিনই বিবৃতি দেন ওমর আবদুল্লাহ। এরপরই তিনি গ্রেফতার হন। তাকে কোথায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা সোমবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি।
কাশ্মীর জন্য সংরক্ষিত ৩৭০ এবং ৩৫এ ধারা বিলোপের কথা বহু দিন ধরেই বলছিল বিজেপি। এ বছর তাদের নির্বাচনী ইশতেহারেও তা উল্লেখ করা হয়।
গত সপ্তাহে আচমকা অমরনাথ যাত্রা বন্ধ, নিরাপত্তা বাড়ানো, দফায় দফায় আধা সামরিক বাহিনী পাঠানো জেরে সর্বদলীয় বৈঠক করেন সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা-ওমর। এর জেরেই গত রবিবার রাতেই গৃহবন্দি করা হয় তাদের।
পরদিন সোমবার সকালে ভারতের সংবিধানে ৩৭০ ধারায় জম্মু ও কাশ্মীরকে যে বিশেষ রাজ্যর অধিকার দেয়া হয়েছিল তা বাতিল করা হয়। ফলে এখন থেকে জম্মু ও কাশ্মীর কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল বলে বিবেচিত হবে বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ঘোষণা দেন।
এই ঘোষণা দেয়ার পরই পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এ মন্তব্য এলো। কাশ্মীরে আরো বেশি পরিমাণ নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োজিত করা ও মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে বৃহত্তর গণতন্ত্রের দেশ ভারতের রাজনীতিবিদরা। সংসদে ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে বক্তব্য-প্রতিবাদের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরছেন তারা। এখন পর্যন্ত ওই সিদ্ধান্তের সমর্থন জানিয়েছে ভাজপা, বিজেডি, শিবসেনা, ওয়াইএসআরসিপি, আপ। অন্যদিকে, বিরোধিতা জানিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস ও জেডিইউ।
উল্লেখ্য, উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই নয়া মোড় নেয় কাশ্মীরে। এক পর্যায় মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাকে পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়। রবিবার রাতেই তাদের গৃহবন্দি করা হয়েছিল৷ সোমবার (৫ আগস্ট) মেহবুবাকে পুলিশ নিজের হেফাজতে নিয়ে হরি নিবাস গেস্ট হাউসে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে৷