গত কয়েকদিনে রাজধানীতে মহামারির রূপ নিয়েছে ডেঙ্গু। ছোট শিশু থেকে বৃদ্ধ অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন ডেঙ্গু জ্বরে। সবার মধ্যে আতঙ্ক ডেঙ্গু নিয়ে।
ইতিপূর্বে দেশে বিভিন্ন সময় ডেঙ্গু রোগ দেখা গেলেও এবারের মতো ভয়াবহ ছিল না। এবার যেমন আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে তেমনি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। এবার সে খাতায় নাম লিখিয়েছেন ষষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র মো. রাইয়ান সরকার।
রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে মেয়ের পাশে বসে কাঁদতে কাঁদতে বাবা মমিন সরকার বলছিলেন, ‘ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ছেলে রাইয়ান সরকারের (১১) লাশ যখন আমার কাঁধে তখন মেয়ে মালিহা সরকার (৬) মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে হাসপাতালে। এই পরিবেশ সহ্য করা কঠিন। আমি ভাবতেই পারিনি, এমনটা ঘটবে আমার সঙ্গে।’
একমাত্র ছেলের জন্য শোক করার ফুসরত পাননি রাইয়ানের বাবা মমিন সরকার ও মা জান্নাত আরা জাহান। কেননা ডেঙ্গুতেই আক্রান্ত ৬ বছর বয়সী মেয়ে মালিহা বিনতে সরকার হাসপাতালে ভর্তি। ছেলের বেলাতেও তো চিকিৎসকেরা বলেছিলেন-ছেলের অবস্থা ভালোর দিকে। কিন্তু ছেলেকে বাঁচানো গেল না। এখন মেয়ের অবস্থা চিকিৎসকেরা যাই বলেন না কেন, তা বিশ্বাস করতে পারছেন না এই বাবা-মা।
এই বাবা আজ মুঠোফোনে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, ‘রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়ে ১১ তলায় কেবিনে ভর্তি। আর ছেলে ছিল ৭ তলায় এনআইসিইউতে। মেয়ে তার ভাইকে দেখে এসেছিল। এখনো জানে তার ভাইয়া ৭ তলায় আছে। তাই একটু পরপর বলে, চলো, ভাইয়াকে দেখে আসি। আমরা ছেলের জন্য শোক করব কেমনে? আমাদের মেয়ে তো জানেই না তার ভাইয়া আর নেই। আমরাও তো বিশ্বাস করতে পারছি না সামান্য জ্বরে আমাদের ছেলেটা নাই হয়ে গেল।’
এসি আই কনজ্যুমার ব্র্যান্ডের জোনাল সেলস ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত মমিন সরকার জানালেন, তাঁরা প্রতিটি মুহূর্ত কাটাচ্ছেন আতঙ্কের মধ্যে। মেয়েকে সুস্থ করে বাড়ি ফেরার আশায় হাসপাতালে দিন কাটাচ্ছেন রাইয়ানের বাবা-মা।