রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত যেসব রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা কেউই রাজশাহীতে আক্রান্ত হননি। ঢাকা অথবা অন্য কোন জেলায় আক্রান্ত হয়ে তারা এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। সে অনুযায়ি এখনো রাজশাহী ডেঙ্গু মুক্তই বলা যায়। তবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু রোগীদের মাধ্যমে রাজশাহীতে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশংকা রয়েছে। কারণ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ব্যবহার করছে না মশারী। ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড ও মশারি দেওয়া হলেও অনেক রোগীই বিষয়টি মানছেন না। ফলে নতুন করে রাজশাহীতেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এক্ষেত্রে রোগীর পাশে থাকা মানুষ ও হাসপাতালে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন।
রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুলাই থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত মোট ৫৩ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন এই হাসপাতালে। এদের মধ্যে ২০ জন এরই মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছেন। বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছেন ৩৩ জন রোগী। শুধু সোমবারই ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। আক্রান্তদের সবাই এসেছেন ঢাকা থেকে। রাজশাহীতে এখন পর্যন্ত কোন অক্রান্ত রোগী নেই।
পাশের বেডেই চিকিৎসাধীন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কিশোরী নূর সাজিয়াকেও মশারির ভেতর রাখা হয়নি। বেডের ওপর মশারি থাকলেও তা এক কোণে জড়ো করে রাখা হয়েছে। সাজিয়ার মা মুসলিমা খানম বলেন, বেডের ওপর ফ্যান নেই। ফ্যানটা একটু দূরে। মশারি টানালে বাতাস লাগে না। তাই মশারি টানাচ্ছেন না। তবে রাতে মশা লাগলে মশারি টানান। সাজিয়া ভর্তি আছেন পাঁচ দিন ধরে।
হাসপাতালের আইসিইউ এর চিকিৎসক মনিরুল ইসলাম বলেন, সব এডিস মশা ডেঙ্গুর জীবাণু বহন করে না। কেবল আক্রান্ত রোগীকে কামড় দেয়ার পরই একটি এডিস মশা ডেঙ্গুর জীবাণু পায়। তাই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত প্রত্যেক রোগীরই মশারির নিচে শোয়া উচিত। তা না হলে এডিস মশা তাকে কামড় দেয়ার পর যদি একজন সুস্থ মানুষকে কামড় দেয় তবে তিনিও ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হবেন।
রামেক হাসপাতালের উপ পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস বলেন, ভর্তি হওয়ার পর পরই আমরা হাসপাতালের পক্ষ থেকেই ডেঙ্গু আক্রান্ত সব রোগীকে মশারি সরবরাহ করেছি। তাদের সব সময় মশারির ভেতরেই থাকতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ওয়ার্ডের নার্সদেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব রোগীই যেন মশারির ভেতর থাকেন সে বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করব।